রিসেপ তায়্যিপ এরদোয়ান |
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষনা দিয়েছেন। তার এই অভিযানের লক্ষ্য হলো সীমান্ত এলাকায় একটি 'বাফার জোন' বা নিরাপদ এলাকা প্রতিষ্ঠা করা যাতে কুর্দি যোদ্ধারা তুরস্কে কোন ধরণের হামলা করতে না পারে। গত ৬ বছরের মধ্যে সিরিয়ায় তুর্কি সেনাবাহিনীর চতুর্থ সামরিক অভিযান হবে এটি। তবে সিরিয়ার ঘটনাবলী বা পরিস্থিতির সাথে এই সামরিক অভিযানের কোনই সম্পর্ক নেই। বিডি ভিউজ ইনফোটেইনমেন্টে স্বাগত জানাচ্ছি আমি--। কেন তুরস্ক এই সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন?
এ নিয়ে অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, তুরস্কের অভ্যন্তরীন রাজনীতিতে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করার জন্যই এরদোয়ান সামরিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের মতে, আগামী বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে সিরিয়ায় এই অভিযানকে ব্যবহার করবেন এরদোয়ান। এছাড়া এই অভিযানের ব্যাপারে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে কি ধরণের প্রতিক্রিয়া আসে।
তা যাচাই করাও এরদোয়ানের লক্ষ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, এরদোয়ান সম্ভবত: বর্তমান ভূরাজনৈতিক ও তুরস্কের অভ্যন্তরীন পরিস্থিতি বিবেচনা করেই সিরিয়ায় অভিযান চালানোর এটাই উপযুক্ত সময় বলে মনে করছেন। গত দুই দশক ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন এরদোয়ান। এখন তার নিজের ও দল একে পার্টির জনপ্রিয়তা পড়তির দিকে। ফলে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনে পরাজয়ের ঝুকিতে রয়েছে একে পার্টি। নতুন নির্বাচন সামনে রেখে সিরিয়ায় অভিযান এরদোয়ান ও তার দলের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দিতে সহায়ক হতে পারে।
অন্যদিকে রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। তুরস্ক ইউরাপের দুই দেশ ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিরোধিতা করায় বিব্রত যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন চাইছে তুরস্ক এই আপত্তি প্রত্যাহার করুক। কিন্তু তার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কাছ থেকে তুরস্কের কি সুবিধা বা লাভ হবে সেটাও বিবেচনা করছেন এরদোয়ান। সবকিছু মিলিয়েই এরোয়ান সিরিয়া অভিযানকে দাবার ঘুটি হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ফিলাডেলিফিয়া'র ফরেন পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রধান গবেষক অ্যারন স্টেইন মনে করেন, সিরিয়ায় অভিযানকে তুরস্কের জাতীয়তাবাদী ভোটারদের ক্ষমতাসীনদের পক্ষে টেনে আনার কাজে ব্যবহার করা যাবে। দীর্ঘদিন ধরেই তুরস্কের অর্থনীতির বেহাল দশা চলছে এবং মূল্যস্ফীতি ৭৩দশমিক ৫ শতাংশে পৌছেছে। তুরস্কে আগামী বছর প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টর নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এরদোয়ান আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সিরিয়ায় এর আগের অভিযানগুলো নির্বাচনে জিততে এরদোয়ানকে সহায়তা করেছে।