MrJazsohanisharma

জাতিসংঘে এরদোগানের ভাষণের সংক্ষিপ্ত অংশ

লেখকঃ সারোয়ার আলম, আনাদলু এজেন্সির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক গবেষক

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তায়্যিপ এরদোয়ান জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণে যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছেন সেগুলো হলোঃ

চিত্রঃ জাতিসংঘে এরদোগান

করোনা মহামারি, তুর্কোভ্যাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ভুমধ্যসাগর, সাইপ্রাস, ককেশাস, আজারবাইজান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ রোহিঙ্গা, কাশ্মীর, উইগুর, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান, জলবায়ু পরিবর্তন।

২৯ মিনিট দীর্ঘ এই বক্তব্যের সিংহভাগ জুড়ে ছিল জলবায়ু পরিবর্তন। তিনি ২০১৫ সালে CO2 নির্গমনের পরিমাণ হ্রাসে প্যারিসে স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক চুক্তিটি আগামী মাসে তুরস্কের পার্লামেন্টে উত্থাপনের ঘোষণা দেন, “তুরস্ক আগামীতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আরও সোচ্চার হবে।” তবে তিনি বলেন, যারা বিশ্বের প্রাকৃতিক সম্পদকে সবচেয়ে বেশি নষ্ট করেছে, ভক্ষন করেছে, ক্ষতি করেছে তারাই এই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি খরচ করতে বাধ্য।

করোনাঃ

করোনা টিকা নিয়ে বিভিন্ন দেশের কট্টর জাতীয়তাবাদের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন আর কিছু দিন পরে বাজারে আসছে তুরস্কের নিজস্ব তৈরি তুর্কোভ্যাক ভ্যাকসিন। তখন এই ভ্যাকসিন সারা বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

সিরিয়াঃ 

তুরস্কে প্রায় ৪০ লাখ সিরিয়ার শরণার্থী আছে। তুরস্কের অধীনে সিরিয়ার যে সব এলাকা আছে সেখানে ৪ লাখেরও বেশি সিরিয়ান ফেরত গেছে। সিরিয়ার সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান জরুরী।

আইএসআইএসঃ 

তুরস্ক একমাত্র ন্যাটো দেশ যে আইএসআইএস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরাসরি এবং সবচেয়ে কার্যকর যুদ্ধ করেছে।

লিবিয়াঃ

লিবিয়ায় শান্তির জন্য তুরস্ক সবসময় কাজ করে যাবে।

ভূমধ্যসাগরঃ

তুরস্ককে বাইপাস করে কোন পরিকল্পনা ভূমধ্যসাগরে সফল হবেনা। তুরস্ক ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী দেশগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। 

সাইপ্রাসঃ

সাইপ্রাসে দু-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের বিকল্প নেই। সাইপ্রাসের এক অংশের(গ্রীক সাইপ্রাসের) প্রধান আজ জাতিসঙ্গের সাধারণ পরিষদে কথা বলতে পারলেও অন্য অংশের (তুর্কি সাইপ্রাসের) প্রধানকে দাওয়াত দেয়া হয় না।

ককেশাসঃ 

ককেশাসীয় অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তুরস্ক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। সেখানে আজারবাইজানের দখলকরা ভূমি ৩০ বছর পরে ফেরত পেয়েছে।

আফগানিস্তানঃ

তুরস্ক আফগানিস্তানের পাশে ছিল আছে এবং থাকবে। বিশ্বের এখন আফগানিস্তানের পাশে থাকা দরকার। গত চল্লিশ বছর ধরে আফগান জনগণ বাইরে চাপিয়ে দেয়া সিস্টেমের মাধ্যমে নিষ্পেষিত। এখন তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব।

বাংলাদেশ রোহিঙ্গাঃ

বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের সম্মানের সাথে, নিজেদের জাতীয় পরিচয় নিয়ে, নিজ ভূমিতে ফেরত যাওয়াকে তুরস্ক সমর্থন করে।

কাশ্মীরঃ 

জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী কাশ্মীর সমস্যার সমাধান দরকার।

ইউঘুরঃ 

ইউঘুরদের অধিকার রক্ষায় তুরস্ক কাজ করে যাবে।

ফিলিস্তিনঃ

দ্বি-রাষ্ট্র তত্ত্বের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন ইসরাইল সমস্যার সমাধান করতে হবে। ফিলিস্তিনি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার থাকবে তুরস্ক।

আফ্রিকাঃ

তুরস্ক আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। এ বছরের গোড়ার দিকে তুরস্কে আফ্রিকার সব দেশের সাথে একটা উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের আয়োজনে কাজ করছে তুরস্ক।

লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ানঃ

লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ানের বিভিন্ন দেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক সম্পর্ক গড়তে তুরস্ক কাজ করে যাচ্ছে।

এশিয়াঃ

"নতুন করে এশিয়া" স্লোগানকে সামনে রেখে তুরস্ক এশিয়ার সব দেশের সাথে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অব্যাহত থাকবে।

তুরস্ক বিশ্বাস করে সবার সাথে একত্রে কাজ করে আরও ন্যায়পরায়ণ একটা দুনিয়া গড়া সম্ভব।

স্যার সারোয়ার আলমের ইউটিউব চ্যানেল লিংকঃ https://youtube.com/c/SorwarAlam

Previous Post Next Post