MrJazsohanisharma

ইসলামি দৃষ্টিকোণে ভালোবাসা দিবস!

লেখকঃ দিদারুল ইসলাম

ভালোবাসা দিবস নিয়ে ইসলাম কি বলে?
ভালোবাসা দিবস ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে কতটা বৈধ

প্রতিবছরের ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে শুধু এদেশেই বরং পুরো পৃথিবীতে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে অনেকে ভালোবাসা দিবস পালন করে৷ অথচ এই দিনের পিছনের নির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কেও মানুষ পুরোপুরি নিশ্চিত নয়, না এই দিবস পালন করা কোনোভাবে যৌক্তিক।কেননা, ভালোবাসা নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণে আবদ্ধ নয়। যারা বছরের বাকি দিনগুলোতে ভালোবাসার আদান প্রদান করতে পারেনা তারাই কেবল এই একদিনে ভালোবাসার মিথ্যা প্রদর্শন দেখাতে ব্যস্ত থাকে। মোটের উপর এই দিবস দ্বীন ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। আমরা এই দিবস এবং ইসলামের অবস্থান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।

ভালোবাসা দিবসের ইতিহাসঃ
ভালোবাসা দিবসের পিছনের নির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে ইতিহাসবিদরা নিশ্চিত নয় বরং এই দিবস সম্পর্কে বিভিন্ন মত রয়েছে৷

যেমনঃ

প্রাচীন রোমে সেখানের অধিবাসীরা  জুনো নামক এক চরিত্রকে তাদের মিথ্যা দেবতাদের রাণী হিসেবে দাবি করতো। তারা জুনোর সম্মানার্থে ফেব্রুয়ারীর ১৪ তারিখে ছুটির দিন পালন করতো এবং ১৫ তারিখে তারা লটারির মাধ্যমে সঙ্গী বাছাই করতো।
কিছু মানুষের বিশ্বাস অনুসারে ফেব্রুয়ারীর ১৪ তারিখ হলো পাখিদের বিয়ের দিন। আবার কারো মতে এদিন থেকে পাখিদের ম্যাটিং পিরিয়ড শুরু হয় এবং তারা সঙ্গী নির্বাচন শুরু করে।
প্রাচীন রোমানরা প্যাগান ধর্মের অনুসারী ছিল এবং তারা তাদের দেবতা লুপারকাসের পূজা করতো এবং সেই পূজা উৎসবকে লুপারক্যালিয়া বলা হতো এবং এই উৎসবের মূল দিন ছিল ফেব্রুয়ারীর ১৪ তারিখ। উল্লেখ্য, এই উৎসবের পূর্ব না ফেব্রুয়া থেকেই ফেব্রুয়ারী মাসের নামকরণ। রোমানদের মধ্যে খ্রিষ্টধর্মের প্রসার ঘটলে পোপ এবং প্রশাসন অনকে প্যাগান রীতিনীতি খ্রিষ্টধর্মের অন্তর্ভুক্ত করে। গেলাসিয়াস নামের একজন পোপ প্যাগানদের এই উৎসবকে তাদের [খ্রিষ্টান পাদ্রী সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামে করা নতুন উৎসব দ্বারা প্রতিস্থাপন করে৷ যার দরুন প্যাগানিস্টদের লুপারক্যালিয়া রূপান্তরিত হয়ে খ্রিষ্টানদের ভ্যালেন্টাইন

আরেক মতানুসারে, সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন যখন কারারুদ্ধ ছিলো তখন কারারক্ষীর অন্ধ এক মেয়ে তার নিকটে আসা যাওয়া করতো এবং তার চিকিৎসায় সে সুস্থ হয়ে যায়৷ ফলে ভ্যালেন্টাইনের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায় এবং কারারক্ষীর মেয়ের সাথে তার সম্পর্কের কথা ছড়িয়ে পরে৷ তাই সম্রাট ফেব্রুয়ারীর ১৪ তারিখে তার মৃত্যুদণ্ড দেয়।

২৬৯ খ্রিষ্টাব্দে রোমে ব্যাপকভাবে সেনা সংকট দেখা দেয়। সম্রাট ক্লডিয়াসের চাহিদার বিপরীতে অল্প সেনা ই পাওয়া যেতো৷ সেনা সংকট কাটানো এবং যুবকদেরকে যুদ্ধে স্থির রাখার উদ্দেশ্যে সম্রাট যুবকদের বিবাহ নিষিদ্ধ করে দেয়। কিন্তু খ্রিস্টান বিশপ সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন এই আদেশের বিরোধীতা করে এবং সম্রাটের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে গোপনে যুবক-যুবতিদের বিয়ে দিতে থাকে৷ কিন্তু সে খবর প্রকাশিত হয় এবং বিভিন্ন ঘটনার পরে ২৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ই ফেব্রুয়ারিতে সম্রাট ধর্মযাজক সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনকে হত্যার আদেশ করে। এবং এটিই সবচেয়ে প্রচলিত ঘটনা।
অনেকের মতে পূর্বের ঘটনা ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট।
উল্লেখ্য, উপরোক্ত দৃশ্যপট ছাড়াও এই দিবসের পিছনের আরো কারণ দাবী করা হয়।

ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিকতাঃ
শির্কঃ
এই উৎসবের একটি প্রধান কারণ হলো প্যাগানদের কল্পিত মিথ্যা দেবদেবির প্র‍তি সম্মান, উপাসনা এবং পশু উৎসর্গ করা৷ এগুলো নিঃসন্দেহে শির্কের অন্তর্ভুক্ত। এবং শির্ক হলো সবচেয়ে বড় জুলুম এবং পাপ।

দলীলঃ
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা তার সাথে শরীক করা হলে তিনি কখনও তা ক্ষমা করেন না, [তবে]এর চেয়ে নিম্নমানের অপরাধ হলে তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। [কুরআন ০৪:৪৮]

 

কাফিরদেরকে অনুসরণঃ
ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবস নিঃসন্দেহে কাফিরদের তথা বিজাতীয় সংস্কৃতি এবং দিবস যা আগের আলোচনায় বলেছি। ইসলামের সাথে এই দিবসের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং দ্বীন ইসলামে কাফিরদের অনুকরণ, অনুসরণ করা হারাম। বরং অধিকাংশ সময় তা কুফরে পতিত করে। তাছাড়া কাফিরদের উৎসব ও তাদের দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত।
দলীলঃ
হে মুমিনগণ, ইয়াহূদী ও নাসারাদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে নিশ্চয় তাদেরই একজন। নিশ্চয় আল্লাহ যালিম কওমকে হিদায়াত দেন না। [কুরআন ০৫:৫১]

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

যে কাউকে অনুকরণ করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। [মুসনাদ,ইমাম আহমাদ]

আবু সাঈদ রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনঃ 

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "তোমরা তোমাদের পূর্বসূরিদেরকে সম্পুর্ন বিঘতে বিঘতে অনুসরণ করবে। এমনকি তারা দাব্বের[এক ধরণের সরীসৃপ] গর্তে ঢুকে গেলে, তোমরা ও সেখানে যাবে।
আমরা জিজ্ঞেস করলাম,"হে রাসুলুল্লাহ, আপনি কি ইহুদি এবং খ্রিষ্টানদেরকে বুঝাচ্ছেন?"
তিনি বলেন,"তো আর কারা?!" [সহীহ বুখারী]

আমর ইবনু শু'আইব রাহিমাহুল্লাহ বর্ণনা করেনঃ

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,"বিজাতির অনুকরণকারী আমাদের দলভুক্ত নয়।তোমরা ইয়াহুদী এবং নাসারাদেরকে[খ্রিষ্টান] অনুকরণ করো না।"[তিরমিজি]

আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনঃ

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,"ইয়াহুদী এবং নাসারারা [চুল ও দাড়িতে] রঙ লাগায় না। সুতরাং তোমরা তাদের উল্টো করো।"[সহীহ বুখারী]
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রাদিআল্লাহু আনহু বলেন,
যে মুশরিকের ভূমিতে নিজের আবাস স্থাপন করবে, তাদের নববর্ষ এবং অন্যান্য উৎসব পালন করবে এবং মৃত্যুর আগে অবধি তাদেরকে অনুসরণ করবে, সে তাদের সাথে [পুনরুত্থান দিবসে]উত্থিত হবে।
ঈদ আল ফিতরের দিনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
নিশ্চয়, প্রত্যেক জাতিরই ঈদ রয়েছে এবং আমাদের ঈদ হলো এই দিনে।[মুসনাদ, ইসহাক ইবনু রাহওয়াইহ]

 

অশ্লীলতার প্রসারঃ
এই দিনে অধিকাংশ স্থানে অশ্লীলতার ব্যাপক প্রসার ঘটে। অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক, শ্লীলতাহানি এ দিনের সাধারণ ঘটনা৷ যার পরিণতি আল্লাহর ক্রোধে নিপতিত হওয়া, গর্ভপাত, আত্মহত্যা! অথচ ইসলামে অশ্লীলতা, জ্বিনা-ব্যবিচার সম্পুর্ন হারাম।

দলীলঃ
তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। কারণ তা হলো অশ্লীল এবং নোংরা পথ। [কুরআন ১৭:৩২]
মুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত।[কুরআন ২৪:৩০]
আর মুমিন নারীদেরকে বলুন, যেনো তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেনো তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেনো নিজেদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবাহ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।[কুরআন ২৪:৩১]
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

কোনো পুরুষ একজন মহিলার সাথে নির্জনের মিলিত হলে তাদের তৃতীয় সঙ্গী হয় শয়তান।[জামি আত তিরমিজি]
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

নিশ্চয় তোমাদের কারো মাথায় লোহার পেরেক ঠুকে দেওয়া ঐ মহিলাকে স্পর্শ করা থেকে অনেক শ্রেয়, যে তার জন্য হালাল নয়। [সিলসিলা সহীহাহ]


অপচয়ঃ
ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন করতে যেয়ে অনেক মানুষ প্রচুর টাকাকড়ি খরচ করে অথচ তার প্রতিবেশি অভুক্ত। ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন করতে যেয়ে যা খরচ হয় নিঃসন্দেহে তা অপচয়।ইসলামে অপচয় করা হারাম।

দলীলঃ
আর কোনোভাবেই অপব্যয় করো না।নিশ্চয়ই অপব্যয়কারীরা শাইতানের ভাই। [কুরআন ১৭:২৬-২৭]
নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদেরকে ভালোবাসেন না। [কুরআন ৬:১৪১]

 

গর্ভপাতঃ
এটা খুব ই স্বাভাবিক অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে যে ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে অনেক যুবক যুবতী অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক তথা জিনায় লিপ্ত হয়। যার দরুন অনেকক্ষেত্রে মেয়ে গর্ভধারণ করে। কিন্তু পরিবারের ভয় এবং বিভিন্ন কারণে অধিকাংশ ই এবরশন তথা গর্ভপাত করে। অনেক আলিমের মতে,

কারণ ছাড়া চল্লিশ দিনের পূর্বেও গর্ভপাত নিষিদ্ধ। এবং এটা নিয়ে দ্বিমত নেই যে ১২০ দিনের পর কোনো ভ্রুণকে হত্যা করা মানুষ হত্যার সমতুল্য।

আত্মহত্যা এবং হত্যাঃ
ভ্যালেন্টাইন এর উপলক্ষে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের এমন ভয়াবহ ফল ও দাঁড়ায় যা আত্মহত্যা এবং হত্যার মতো জঘন্য কাজের জন্য দায়ী অথচ দুটি ই ইসলামের দৃষ্টিতে নিকৃষ্ট কাজ।

দলীলঃ
আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন:

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,"যে ব্যক্তি ফাস লাগিয়ে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামে নিজেকে ফাস লাগাতে থাকবে এবং যে ব্যক্তি বর্শার আঘাতে আত্মহত্যা করবে সে জাহান্নামে বর্শাবিদ্ধ হতে থাকবে।"[সহীহ বুখারী]
আর যে ইচ্ছাকৃত কোনো মুমিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লা'নত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রাখবেন। [কুরআন ০৪:৯৩]


কাফিরদের প্রতি ভালোবাসাঃ
কোনো কাফির এবং মুশরিকদের সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক কোনো মুমিন রাখতে পারেনা। কোনো বিধর্মীকে ভালোবাসা নিঃসন্দেহে হারাম।

দলীলঃ
আপনি পাবেন না এমন জাতিকে যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান আনে, বন্ধুত্ব করে তার সাথে যে আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরোধীতা করে, যদিও তারা তাদের পিতা, অথবা পুত্র, অথবা ভাই, অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। এরাই, যাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তার পক্ষ থেকে রূহ দ্বারা তাদের শক্তিশালী করেছেন। [কুরআন ৫৮:২২]

 

ইসলামে ভালোবাসা এবং মিথ্যা ভ্যালেন্টাইনের ধোকাঃ
ভ্যালেন্টাইন ডে এর সঠিক প্রেক্ষাপট ই অজানা তাছাড়া কোনো প্রেক্ষাপট ই ভালোবাসার পরিপূর্ণ  ব্যখ্যা করেনা। তাছাড়া এ কেমন ভালোবাসা যেটা সারাবছর থাকবে না অথচ একটি সীমাবদ্ধ দিবসে উতলে পড়বে? তার উপর এই দিবসের ভিত্তিতে গড়ে উঠা ভালোবাসার অধিকাংশ ই নিঃসন্দেহে অবৈধ। এটা ধোকাবাজি এবং যুবকদের উপর চাপিয়ে দেয়া দিবস মাত্র।
অথচ ইসলাম সর্বক্ষেত্রে ভালোবাসার কথা বলে হোক তা স্ত্রী কিংবা পিতা-মাতা কিংবা আত্মীয় কিংবা মুমিনের সাথে।

দলীলঃ  
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ! তোমরা জান্নাতে প্রবেশ কর‍তে পারবেনা যদিনা তোমরা সত্যিকার ঈমান আনো, এবং তোমরা সত্যিকার মুমিন হতে পারবেনা যদিনা তোমরা একে অন্যকে ভালোবাসো।[সহীহ মুসলিম]
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

কেউ যদি তার ভাইকে ভালোবাসে, সে যেনো তাকে বলে যে সে তাকে ভালোবাসে। [সুনান আবি দাউদ]

বিশ্বের যে যে দেশে ভ্যালেন্টাইন ডে পালনে নিষিদ্ধঃ
বর্তমানে পাকিস্তানসহ অনেক মুসলিম জনসংখ্যা প্রধান দেশে ভ্যালেন্টাইন ডে পালন নিষিদ্ধ!

এমনকি অনেক দারুল কুফর তথা কাফিরদের ভূমিতে এই দিবস পালনে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা ছিলো। 

ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া সহ অনেক দেশেই তা উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা ছিলো।


ভ্যালেন্টাইন ডে নিয়ে আলিমদের ফাতাওয়াঃ
শাইখ ইবনু উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহঃ
মাজমু ফাতাওয়া আশ শাইখ ইবনু উসাইমিন[১৬/১৯৯]
অনেক কারণে ভালোবাসা দিবস উদযাপন করা হারাম।
১। এটি নতুন উদ্ভাবিত একটি উৎসব দ্বীনে যারা ভিত্তি নেই।
২। এটি ভালোবাসা এবং মোহগ্রস্ততা বৃদ্ধি করে।
৩। এটি অন্তরকে নির্বোধ বিষয়ে উন্মনার দিকে আহবান করে যা সালাফ আস সালিহের মানহাজের সাথে সাংঘর্ষিক।
৪। এই দিনে এমন জিনিস করা হারাম যা উৎসবের বৈশিষ্ট্য হোক তা খাদ্য, ড্রিংকস, পোষাক,উপহার বিনিময় কিংবা অন্যকিছুর মাধ্যমে।

শাইখ ইবনু জিব্রীন রাহিমাহুল্লাহঃ

প্রথমতঃ
এই নব আবিষ্কৃত উৎসব উদযাপন করা হারাম কেননা এটা এমন নতুন বিষয় দ্বীনে যার ভিত্তি নেই।এটা আয়িশা রাদিআল্লাহু আনহার হাদিসের অধীনে আসে! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,"যে ব্যক্তি আমার এ দ্বীনের মধ্যে নতুন কোনো জিনিস সূচনা করবে যা এর অন্তর্ভুক্ত নয় তা প্রত্যাখ্যাত।"
দ্বিতীয়তঃ
এর মধ্যে রয়েছে কুফফারদেরকে অনুসরণ এবং তারা যাকে সম্মান করে সেটাকে সম্মান করার মাধ্যমে এবং তাদের উৎসব ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে সম্মানের মাধ্যমে তাদেরকে অনুসরণ করা এবং তাদের ধর্মের অংশ হিসেবে যা কিছু আছে তার অনুকরণ করা।হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,"যে কাউকে অনুকরণ করবে, সে তাদের ই অন্তর্ভুক্ত।"
তৃতীয়তঃ
এর ফল হারাম এবং খারাপ জিনিস যেমন সময়ের অপচয়, গান, মিউজিক, অপব্যয়, বেপর্দা, অসচ্চরিত্র প্রদর্শন, নারী পুরুষের মেলামেশা, মাহরাম ব্যতীত পুরুষদের সামনে যাওয়া এবং অন্যান্য হারাম জিনিস যা অনৈতিকতার দিকে ধাবিত করে।
তিনি আরো বলেনঃ কারো জন্য সেই ফুল এবং উপহার বিক্রয় করা হারাম যদি সে জানে যে ক্রেতা সেই উৎসব পালন করবে কিংবা সেগুলোকে এই দিন উপলক্ষে উপহার দিবে।

এতে সন্দেহ নেই যে ভ্যালেন্টাইন ডে পালন এবং খ্রিষ্টানদের সংস্কৃতি। ভ্যালেন্টাইন ডে পালন নিঃসন্দেহে হারাম।
ভ্যালেন্টাইন ডে সম্পর্কে জেনেও এই দিবস পালন জায়িয মনে করা কুফর। আল্লাহ তা'আলা ভালো জানেন।

[বিদ্রুপঃ
তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছেঃ
কাফিরদেরকে অনুসরণ,ইমাম আয যাহাবী
ইসলামকিউএ এবং ইসলামওয়েব
বিভিন্ন হাদিসগ্রন্থ
উইকিপিডিয়াসহ বিভিন্ন এনসাক্লোপিডিয়া
এবং ওয়েবসাইট ও অন্যান্য সোর্স থেকে।]
Previous Post Next Post